- by machine_lagbe
- 0
- Posted on
- 171
বাংলাদেশের কাঠ স মিল ইন্ডাস্ট্রি (২০২৪)
বাংলাদেশের কাঠ স মিল ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে বিস্তারিতঃ
ফার্নিচার তৈরির সময় কাঠকে কিছু নির্দিষ্ট প্রসেস এর মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। তার মধ্যে প্রথম ধাপটি হলো গাছ বা লগ থেকে নির্দিষ্ট মাপে কাঠ কেটে সেগুলোকে তক্তার আকার দেওয়া। বাংলাদেশে ফার্নিচার তৈরীতে সাধারণত ৬” থেকে ১৬” চওড়া আকারে তক্তা বের করা হয়। কাঠ স মিল ইন্ডাস্ট্রিতে ট্রেডিশনাল বা প্রচলিত ধরণের মেশিন দিয়েই সাধারণত গাছ বা লগ কাটা হয়। ট্রেডিশনাল টাইপ মেশিনে খরচ কম বলে বাংলাদেশের কাঠ স মিল ইন্ডাস্ট্রিতে সবাই প্রচলিত ধরণের মেশিন দিয়েই গাছ কাটে। তবে আধুনিক মেশিন বা ট্রলি সার্কুলার টাইপ মেশিন দিয়ে ও কিছু কিছু জায়গাতে এখন কাজ হচ্ছে।
ট্রেডিশনাল বা প্রচলিত ধরণের মেশিনে এককালীন ইনভেস্টমেন্ট কম তবে এই ধরণের মেশিনে শ্রমিকের উপরে নির্ভরশীলতা বেশি। এছাড়া এই মেশিন বসিয়ে কাজ করতে হলে সর্ব প্রথম একটি বড় জায়গার প্রয়োজন হবে। তার জায়গায় একটি বৈদ্যুতিক লাইন এর প্রয়োজন হবে যা ৩০ ঘোড়া মোটর চালানো যাবে এমন। অবশ্যই লাইন টি ৩৮০ ভোল্ট এর হতে হবে । যা জোগাড় করতে প্রায় ১,০০,০০০ টাকা এবং ৫-৬ মাস সময় লেগে যাবে। এই ধরণের একটি ‘স’ মিল কারখানাতে সাধারণত ৫-৬ জন শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। প্রতি মাসে একটি ‘স’ মিল কারখানায় শ্রমিকের জন্য প্রায় ১০০০০০/- – ১৫০০০০/- টাকা খরচ হয়। শ্রমিক ঠিক মতো পাওয়া যায় না, আধুনিক যুগেও এই ইন্ডাস্ট্রিতে শ্রমিক দাদন নিয়ে কাজ করে। সেই সাথে দক্ষ শ্রমিকের অভাব। দক্ষ শ্রমিকের জন্য স মিলে কাঠ কাটার সময় কাঠ বাঁকা হয়ে কাটে। এজন্য কাঠের অনেক অপচয় হয়। প্রত্যেক পিছ কাঠ এ মিনিমাম ১.৫-২ সুতা (৬ মিলিমিটার) অপচয় হবে । এছাড়া এই মেশিন ব্যবহারে বিদ্যুৎ বিল অনেক আসে। কাঠ কে কোণ নির্দিষ্ট পরিমাপ এ কাটার জন্য কোণ স্কেল অথবা পরিমাপক মিটার/ যন্ত্র নেই। টুকরো টুকরো কাঠ কে মাপ নিয়ে কেটে কাঠের মাটাম বানিয়ে তার সাথে সেট করে দিয়ে তারপর গাছ কাটা হয়। এতে করে অনেক সময় কাঠ সঠিক মাপ এ কাটা হয় না ।
অপরদিকে আধুনিক মেশিন ব্যবহার করলে অবশ্য এই ধরণের সমস্যা থেকে অনেকাংশেই মুক্তি পাওয়া যায়। আধুনিক মেশিন ব্যবহার করলে ২-৩ জন শ্রমিক দিয়েই পুরো ফ্যাক্টরি চালানো যায়। মেশিন অটোমেটিক হওয়াতে কাঠের কাটিং একুরেসি ঠিক থাকে কাঠ বাঁকা হয়ে কাটে না। এতে কাঠের অপচয় অনেক কম হয়। এছাড়া এই মেশিন ব্যবহারে বিদ্যুৎ বিল ও অনেক কম আসে। এই মেশিনে বিদ্যুৎ বিল ২০,০০০ – ৩০,০০০ টাকার মদ্ধে হয়ে যাবে । স্কেল এর সাহায্যে পরিমাপ করে কাটার কারনে কাটিং এর অবচয় রোধ হয় তবে এই মেশিন গুলো ব্যবহার করার জন্য ট্রেডিশনাল বা প্রচলিত ধরণের মেশিন এর তুলনায় এককালীন অনেক বেশি টাকা ইনভেস্ট করতে হয়। মূলত এই ইনভেস্ট এর জন্য এই ইন্ডাস্ট্রিতে বাংলাদেশের কাঠ ব্যবসায়ীগণ এখনো ট্রেডিশনাল বা প্রচলিত ধরণের মেশিন ব্যবহার করছেন ।
‘স’ মিলে কাঠ কাটার সময় একটু বিষয়ে আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে সেটি হলো কাঠের মাপ। এটি না করলে অনেক দিক দিয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।
চেড়াই কাঠ ও গোল কাঠ হিসাবের সহজ পদ্ধতিঃ-
দুইটি সূত্র মুখস্ত রাখতে পারলেই চেড়াই কাঠ ও গোল কাঠের হিসাব খুব সহজেই করতে পারবেন। চেড়াই কাঠ পরিমাপের জন্য একটি সূত্র এবং গোল কাঠ পরিমাপ করার জন্য অন্য আর একটি সূত্র।
উপরের ছবিটি লক্ষ্য করুণ এখানে দৈর্ঘ্য ১০০ ফিট, প্রস্থ ১৪ ইঞ্চি এবং উচ্চতা বা পুরত্ব ২ ইঞ্চি রয়েছে। এখন সবগুলোকে গুণ করে ১৪৪ দিয়ে ভাগ করলে বের হয়ে যাবে এখানে কত কিউবিক ফুট বা ঘন ফুট কাঠ রয়েছে।
(মনে রাখবেন দৈর্ঘ্য হবে ফুটে এবং প্রস্থ ও উচ্চতা বা পুরত্ব হবে ইঞ্চিতে, নাহয় হিসেব মিলবে না।)
সূত্র: (দৈর্ঘ্য × প্রস্থ × পুরত্ব ) ÷ ১৪৪ = সিএফটি
(দৈর্ঘ্য ১০০ ফুট × প্রস্থ ১৪ ইঞ্চি × পুরত্ব ২ ইঞ্চি ) ÷ ১৪৪
বা (১০০ × ১৪ × ২) ÷ ১৪৪
বা ২৮০০ ÷ ১৪৪
২৮০০ কে ১৪৪ দিয়ে ভাগ করলে হয় ১৯.৪৪ সিএফটি ।
অর্থাৎ ১৯.৪৪ সিএফটি কাঠ রয়েছে এখানে।
গোল কাঠের হিসাব :
উপরের ছবিটি লক্ষ্য করুণ
পূর্বের মত এখানেও মনে রাখতে হবে, দৈর্ঘ্য হবে ফুটে এবং গোলবেড় হবে ইঞ্চিতে।
সূত্র:( দৈর্ঘ্য × গোলবেড়ি × গোলবেড়ি) ÷ ২৩০৪ = সিএফটি
(দৈর্ঘ্য ৪০ ফুট × ২০ ইঞ্চি × ২০ ইঞ্চি) ÷ ২৩০৪
বা ( ৪০ × ২০ × ২০ ) ÷ ২৩০৪
বা ১৬,০০০ ÷ ২৩০৪
এবার ১৬,০০০ কে ২৩০৪ দিয়ে ভাগ করলে হয় ৬.৯৪ ।
অর্থাৎ ৬.৯৪ সিএফটি কাঠ আছে ।