• 01816966966

  • Dhaka, Bangladesh

how to treatment wood perfectly

কাঠের ট্রিটমেন্ট প্লান্ট

কাঠ ট্রিটম্যান্ট প্লান্ট – পল বা অসার কাঠ আসলে কি?

কাঠ ট্রিটম্যান্ট প্লান্ট বা  এটিকে কাঠের প্রিজাভেশন ও বলা হয়। যে প্রসেসে এই কাজটি করা হয় তাকে কাঠের ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বলে । গাছের কেন্দ্রের দিকের কাঠ যার রং অপেক্ষাকৃত গাঢ়, এই অংশের কাঠকে Dead/Dry Portion বা কাঠের সার অংশ বা সারি কাঠ বলা হয়ে থাকে।এ অংশের কাঠ শক্ত ও অনেক বেশি টেকসই হওয়ায় এ অংশের কাঠকে Hardwood বলা হয় এবং এর মূল্য বেশি।গাছের এ অংশ ঘুঁনপোকা ও টারমাইট মুক্ত। কাঠের অসার অংশ বা কাঠের পল হচ্ছে সাধারনত গাছের কেন্দ্র থেকে দূরবর্তী অংশ বা গাছের বাহ্যিক অংশ বা Sapwood। এই অংশকে কাঠের জীবিত অংশ(Living part) বলা হয়ে থাকে।এ অংশের কাঠ অপেক্ষাকৃত নরম হয়ে থাকে ও ঘুঁন ও টারমাইট এটাক হওয়ার সম্ভবনা অনেক বেশি থাকে।কাঠের মাঝে মাঝেও এই পল বা অসার অংশ(soft tissue) দেখা যেতে পারে যা কেটে বাদ দিয়ে দিয়েও আসবাবপত্র বানানো যায়।এক্ষেত্রে অনেক কাঠ বাদ দিতে হয় বলে আসবাবপত্রটির মূল্যও বেড়ে যায়। সব কাঠের পলে একই সময় ঘুঁন ধরে না।কোন কাঠের পলে খুব তারাতারিই আবার কোন কাঠের পলে অনেক দেরিতে ঘুঁনে ধরতে পারে।

গাছের উচ্চতা,আকার,আয়তন,বয়স অনুযায়ি কাঠের ও আসবাবপত্রের দাম কম বেশি হয়। কাঠের পল বা অসার অংশ চেনার সবচেয়ে সহজ উপায় হল কাঠের রং অসার অংশের রং হালকা এবং উজ্জ্বল।আর সারি কাঠ হয় গাঢ় ও অনুজ্জ্বল। মেহগনি ও গামারী কাঠের রং সাদাটে হওয়ায় এ কাঠ গুলোর পল বা অসার অংশ চিহ্নিত করা যায়না বললেই চলে। তাই এসকল কাঠ ব্যবহারের পূর্বে আমাদের উচিত কাঠকে কেমিক্যাল ট্রিটম্যান্ট করা।

কাঠের ট্রিটমেন্ট বা কাঠকে ছত্রাক , ঘুন পোকা ও ফাঙ্গাস এর হাত থেকে বাচাতে কাঠ ‘স’ মিল থেকে কেটে নিয়ে আসার পর যে কাজটি করতে হয় সেটি হলো কাঠকে ট্রিটমেন্ট করা। কাঠ ট্রিটমেন্ট করলে অনেক কমদামি কাঠ দিয়ে বানানো দরজা বা ফার্নিচার ও অনেক দিন ধরে ব্যবহার করা যায়।
প্রথমত বাংলাদেশে লোকাল মার্কেটে বেশিরভাগ জায়গাতে আসলে কাঠের ট্রিটমেন্ট হয় না।

বাংলাদেশে প্রচলিত উপায়ে কাঠের ট্রিটমেন্ট প্লান্ট

দ্বিতীয়ত অনেক জায়গাতে কাঠের ট্রিটমেন্ট করা হয় তবে সেগুলো সনাতন পদ্ধতিতে। এক্ষেত্রে খুব সাধারাণ একটি কাজ করা হয় সেটি হলো একটি চৌবাচ্চায় কেমিক্যালের দ্রবণ দ্রবণ মিশিয়ে কাঠকে ডুবিয়ে রাখা হয়। এক্ষেত্রে কাঠ যেন দ্রবনের ৬ ইঞ্চি নীচে ডুবে থাকে সেটি নিশ্চিত করা হয়। এরপর প্রয়োজন মত কাঠের উপর নির্ভর করে ১ -৩ দিন পর্যন্ত ডুবিয়ে রাখা হয়। অতঃপর কাঠ চৌবাচ্চা থেকে উঠিয়ে রোদে শুকিয়ে ব্যবহার উপযুগী করা হয়। এক্ষেত্রে কাঠে যেহেতু কোন চাপ দেওয়া হয় না, সে জন্য কাঠের গভীরে কেমিক্যাল পৌঁছাতে পারে না। এজন্য কাঠ ১০০% সঠিক ভাবে ট্রিটমেন্ট হয় না।

আধুনিক উপায়ে কাঠের ট্রিটমেন্ট প্লান্ট

তৃতীয়ত বাংলাদেশের বড় কোম্পানি বা কর্পোরেট লেভেলে কিছু জায়গাতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাঠের ট্রিটমেন্ট করা হয়। আধুনিক প্রযুক্তি বলতে এখানে ট্রিটমেন্ট করার জন্য একটি আধুনিক মেশিন থাকে। এই মেশিন দেখতে একটি অনেক বড় আকৃতির লম্বা গোলাকার টিউব এর মত। কাঠ ট্রিটমেন্ট করার জন্য এই মেশিনের ভিতরে কাঠ ঢুকানো হয়। এরপর একটি ব্যাকিয়ুম পাম্পের সাহায্যে টিউবটিকে বায়ু শূন্য করা হয়। এরপর আর একটি পাম্পের সাহায্যে কেমিক্যালের মিশ্রিত পানি এই পাত্রে প্রবেশ করানো হয় এবং কেমিক্যালের দ্রবণ কাঠের গভীর পর্যন্ত যেন পৌছাইতে পাড়ে এর জন্য একটি কম্প্রেশার মেশিনের সাহায্য হাওয়ার প্রেশার দেওয়া হয় চেম্বারের ভিতরে । এই অবস্থায় প্রায় ৪ ঘন্টা রেখে অতঃপর পাম্পের সাহায্যে দ্রবণ টিউব থেকে বের করে আনা হয়।এবং কাঠ টিউবের ভিতর থেকে বেড় করে আনা হয়।সাইজ অনুযায়ী ১০০ থেকে ৭০০ cft পর্যন্ত কাঠ ট্রিটমেন্ট করা যায়।
আসবাবপত্রের উপর ভিত্তি করে কাঠ ট্রিটমেন্ট এর কেমিক্যাল মিক্সিং সাধারণত দুই ভাবে হয়। ঘরের ভিতর ব্যবহৃত আসবাবপত্র এবং ঘরের বাইরে ব্যবহৃত আসবাবপত্র।

ঘরের ভিতর ব্যবহৃত আসবাবপত্রের জন্য কেমিক্যাল নিম্নরূপ :

ঘরের ভিতর ব্যবহৃত আসবাবপত্রের জন্য বোরাক্স, বোরিক এসিড এবং পানির মিশ্রনে কেমিক্যাল তৈরী করা হয়। পরিমান নিম্নরূপ
১০% ঘনত্বের জন্য: বোরাক্স – ০৫ কেজি, বোরিক এসিড – ০৫ কেজি এবং পানি ৯০ লিটার ( মোট ১০০ লিটার )
২০% ঘনত্বের জন্য: বোরাক্স – ১০ কেজি, বোরিক এসিড – ১০ কেজি এবং পানি ৮০ লিটার ( মোট ১০০ লিটার )

ঘরের বাইরে ব্যবহৃত আসবাবপত্রের জন্য কেমিক্যাল নিম্নরূপ : ঘরের বাইরে ব্যবহৃত আসবাবপত্রের জন্য কপার সালফেট, সোডিয়াম ডাই ক্রোমেট এবং বোরিক এসিড এবং পানির মিশ্রনে কেমিক্যাল তৈরী করা হয়। পরিমান নিম্নরূপ:
১০% ঘনত্বের জন্য: কপার সালফেট – ০৪ কেজি, সোডিয়াম ডাই ক্রোমেট – ০৪ কেজি, বোরিক এসিড – ০২ কেজি এবং পানি ৯০ লিটার ( মোট ১০০ লিটার )
২০% ঘনত্বের জন্য: কপার সালফেট – ০৮ কেজি, সোডিয়াম ডাই ক্রোমেট – ০৮ কেজি, বোরিক এসিড – ০৪ কেজি এবং পানি ৮০ লিটার ( মোট ১০০ লিটার )

কাঠে ঘুনে ধরার একমাত্র কারণ হলো কাঠের ভিতরের কশ বা রশ এই কশ বা রশ থেকেই উৎপত্তি হয় ঘুনপোকা বা ফাঙ্গাস। তাই কাঠকে দীর্ঘস্থায়ী করে ফার্নিচার ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই ট্রিটমেন্ট করতে হবে। না হলে ফার্নিচার বা দরজায় ঘুন আসবেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *